বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। কিন্তু মহামারির মধ্যেই কওমি মাদ্রাসায় পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

এটাই হবে মহামারি শুরুর পর প্রথম কোন পাবলিক পরীক্ষা। আজ মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কি সিদ্ধান্ত হয়েছে?

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক সংবাদ ব্রিফিং-এ বিষয়টি জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “কওমি মাদ্রাসাগুলো আপিল করেছিল যে তারা উপরের লেভেলের পরীক্ষাগুলো নিতে চায়, দাওরায়ে হাদিস অর্থাৎ গ্রাজুয়েশন ও মাস্টার্স পর্যায়ের। সরকার তাতে সম্মত হয়েছে। তবে জেনারেল কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলবে না।”

বাংলাদেশে ছয়টি মাদ্রাসা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত আল হাইআতুল উলয়া বোর্ডের সদস্যদের একজন মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ জানিয়েছেন, “সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার শর্তে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে আমরা এখনো কোন প্রজ্ঞাপন পাইনি। আশা করি পেয়ে যাব।”

মি. ফয়জুল্লাহ জানিয়েছেন মাস্টার্স পর্যায়ে কওমি মাদ্রাসাগুলোতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজারের মতো।

তিনি বলেন, “মাদ্রাসা বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি চেয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে এক চিঠিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম।”

ঈদুল ফিতরের পর কওমি মাদ্রাসাগুলোর নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই মহামারির কারণে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান স্থগিত রাখা হয়।

মাদ্রাসা ছাত্র
এর আগে হাফিজিয়া মাদ্রাসা চালুর অনুমতি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মহামারির কারণে যেসব পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা

মহামারির কারণে এখনো আটকে রয়েছে এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এপ্রিল মাসে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

একই মাসে হওয়ার কথা ছিল অষ্টম শ্রেণি শেষে জেএসসি বা জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষা। সেটিও অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।

পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাও নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

গত সপ্তাহেই পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা না নেয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মতামত পাঠানো হয়েছে৷

তবে করোনাভাইরাস মহামারির আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা কিন্তু এর ফল ঘোষণাতে অনেক সময় নেয়া হয়।

বাংলাদেশে ১৭ মার্চ থেকে পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে তবে সেপ্টেম্বরে অথবা কবে নাগাদ স্কুল খুলবে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়।

পরীক্ষার্থী
মহামারির কারণে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে।

কওমি মাদ্রাসাকে যে কারণে পরীক্ষা অনুমতি

বাংলাদেশে এর আগে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে হাফিজিয়া মাদ্রাসা চালুর অনুমতি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

অন্যান্য সকল পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত থাকলেও কওমি মাদ্রাসাকে পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি কী কারণে দেয়া হচ্ছে , সেটি ঠিক পরিষ্কার নয়।

বিষয়টি কথা বলতে আমি যোগাযোগ করেছিলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে। তবে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

Source:BBC