মনির হোসাইন (ঢাকা):

গত ২৯/০৭/২০২০ তারিখে রাজধানী ঢাকার উত্তরখান থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দুইশতের অধিক বস্তিবাসী বাচ্চা ও পথশিশুদের মাঝে এই পোষাক বিতরণ করা হয়।হঠাৎ আগত এক বৈশ্বিক মহামারীতে সমস্ত পৃথিবী আক্রান্ত। ধনী দেশগুলো এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনো এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সাথে লড়াই করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। জীবিকার তাগিদের হণ্যে হয়ে ছুটে ফিরছে মানুষ ঘরে-বাইরে, পথে-প্রান্তরে। তুলনামূলক ধনী শ্রেনীর মানুষজন এই যুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হলেও চরম বিপদে পড়েছে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে শহর এলাকার বস্তিবাসী ও হকার শ্রেণীর মানুষজন। দেশের এমন পরিস্থিতি সরকারের একার পক্ষে মুকাবলা করা খুব কঠিন। তবে সরকারের সাথে সাথে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মানবিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে এসেছে দরিদ্র, হতদরিদ্র, বস্তিবাসী, পথশিশুদের জন্য মানবিক মন নিয়ে। করোনার এই দুঃসময়ে অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে যারা মানব কল্যাণে এগিয়ে এসেছে এমন একটি মানবিক সংগঠন হলো ‘ইনস্পায়ারেশন- সাহায্যেই হোক স্বাবলম্বী’। করোনা মহামারীতে দেশ যখন লকডাউনে বন্ধি ছিলো তখন এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা পথে পথে, দুস্থ মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে পৌঁছে দিয়েছে খাদ্য সামগ্রী। আয়োজন করেছে বিভিন্ন পরিচ্ছন্নতা মূলক কর্মকান্ডের, অনাহারী মানুষের জন্য রান্না করা খাদ্য বিতরণ, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অসচেতন মানুষদের সচেতন করতে নিয়েছে মাস্ক বিতরণ ও অন্যান্য কর্মসূচি। তবে ইনস্পায়ারেশন-এর সবচেয়ে আলোচিত ও অন্যান্য আয়োজন ছিলো হতদরিদ্র পথশিশুদের নিয়ে। এতিম অসহায় দুস্ত পরিবারের বাচ্চারা যারা ইদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয় তাদের জন্য ইনস্পায়ারেশন প্রথমবারের মত গত রমজানের ইদে আয়োজন করে ‘ইদের খুশি’ শিরোনামে নতুন পোষাক বিতরণ কর্মসূচি। প্রথম বারের আয়োজনে দুইশয়েরও অধিক বাচ্চার মাঝে তারা পোষাক বিতরণ করে। ইদুল ফিতরের ধারাবাহিকতায় এবার ইদুল আজহায়ও ইনস্পায়ারেশন আয়োজন করে ‘ইদের খুশি’। রাজধানী ঢাকার উত্তরখান থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দুইশতের অধিক বস্তিবাসী বাচ্চা ও পথশিশুদের মাঝে ২৯/০৭/২০২০ তারিখে এই পোষাক বিতরণ করা হয়। ‘ইদের খুশি’ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও অনলাইন ভিত্তিক মানবিক সংগঠন ইনস্পায়ারেশনের এডমিন হাসান সারোয়ার মা’মূর, মডারেটর মমতাজ লিপি, রাকিব আহমেদ। এছাড়াও ইনস্পায়ারেশন-এর স্বেচ্ছাসেবী টিম ইনস্পায়ারেশন আর্মি টিমের দলনায়ক নাইফ আল মা’মূর ও অন্যান্য সদস্যরা। এডমিন হাসান সারোয়ার মা’মূরের কাছে তাদের আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ইনস্পারেশন’ একটি মানবিক সংগঠন, মানুষের বিপদে-প্রয়োজনে ইনস্পায়ারেশন মানুষের পাশে দাড়াতে চেষ্টা করে সব সময় কিন্তু আমাদের সীমিত সামর্থ্যের কারণে আমরা অনেক কিছু করতে চেয়েও পারিনা। তবে আমাদের সামর্থের মধ্যে আমরা সবসময় মানুষের পাশে থাকবো। আজকের আয়োজন সম্পর্কে মডারেটর মমতাজ লিপি বলেন, “এই-যে দুস্থ বাচ্চাগুলোর মুখের হাসি, এই হাসি আমাকে আনন্দ দেয়।” রাকিব আহমেদ একজন ছাত্র, ইনস্পায়ারেশনের একজন মডারেটর, তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তার অনুভূতি, সে বলে “মানুষের জন্য কাজ করতে পারার মত সুখ আর নাই। গ্রুপের আরেকজন এডমিন নিউইয়র্ক প্রবাসী সঞ্জিত শাহা’র ফোনে জানায়, “আগামী মাসে আমরা দেশের বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য কাজ করবো।” সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। ইনস্পায়ারেশনের মত দেশের অনেক সংগঠনের অবদানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই, সরকার ও দেশের ধনী শ্রেনীর সহযোগিতা পেলে এই ছোট সংগঠনগুলোও দেশ গঠনে ভাল ভূমিকা রাখতে পারবে।