ডেস্ক রিপোর্টঃ
১৩ বছর পর ভেঙে গেল অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি। আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এলডিপির পৃথক সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিকেল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন অলি আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ করে অলি আহমেদ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না। আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করতে চাই। এ জন্য মুক্তিমঞ্চ করার প্রয়োজনীয়তা নেই।’
২০০৬ সালে বিএনপি থেকে বেরিয়ে এলডিপি গঠন অন্যায় ও পাপ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এলডিপির নেতা শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘এলডিপি গঠন করে যে অন্যায় ও পাপ করেছি, আশা করি বিএনপি সে অন্যায় এবং পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দেবে।’
শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সঙ্গে সংযুক্ত থাকব এবং ২০ দলের অন্তর্ভুক্ত দলগুলোর সঙ্গেও সংযুক্ত থাকব। আমরা আশা করব, বিএনপি আমাদের স্বীকৃতি জানাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল করিম আব্বাসীকে আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেনকে সদস্যসচিব করে সমন্বয় কমিটি ঘোষণা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, এলডিপির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সাংসদ আবদুল গণি, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ বাশার, সৈয়দ ইব্রাহিম রওনক, তৌহিদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক কাজী মতিউর রহমান। এই সমন্বয় কমিটি সারা দেশে এলডিপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে অচিরেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নেবেন।
২০০৬ সালে এলডিপি গঠনের সময় থেকেই শাহাদাত হোসেন দলের যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। ১৩ বছর পর তিনি বলেন, অলি আহমেদের সঙ্গে রাজনীতি করা আর সম্ভব নয়।
এলডিপির আহ্বায়ক আবদুল করিম আব্বাসী বলেন, উনি নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করেন না। তিনি একবার এদিকে আরেকবার ওইদিকে দৌড়ান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘অলি আহমেদ এলডিপিকে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীকে দেশপ্রেমিক শক্তি বলে যে সম্মান দিচ্ছেন, এটা পারেন না। এর সঙ্গে আমাদের দ্বিমত আছে। আমরা তার কমিটি মানি না।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন এলডিপিতে প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাদের বেশির ভাগই নেই। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের একজনও তাঁর সঙ্গে নেই। এর মধ্যে গত ৯ নভেম্বর যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে ১৭ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যে মাত্র চারজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এদের কেউ অতীতে এলডিপি করত না।
২০০৬ সালে বিএনপির ক্ষমতার শেষ দিকে দলে বড় ধরনের বিদ্রোহ হয়। তখন বিএনপির ৩২ জন সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদসহ ১০২ জন নেতা একজোটে বেরিয়ে গিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অলি আহমেদের নেতৃত্বে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি গঠন করে। একপর্যায়ে এলডিপি ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দল বিকল্পধারা বাংলাদেশ একীভূত হয়। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে পরে দুই দল আলাদা হয়ে যায়।
এমএমএন