কখনো রাস্তার পাশ থেকে চুপিসারে, কখনো অপরিচিত কারও বাড়িতে লুকিয়ে আবার কখনো সবজির ব্যাগে ক্যামেরা রেখে ছবি তোলা! গত বছর আগস্টে এভাবেই অচল কাশ্মীরের ছবি তুলেছিলেন তিন সাংবাদিক। কাশ্মীরে ভারত সরকার আরোপিত লকডাউনে জীবন বাজি রেখে তোলা সেই ছবিই তাদের এনে দিয়েছে শ্রেষ্ট স্বীকৃতি। পেয়েছেন সাংবাদিকতার নোবেলখ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার।
পুলিৎজার পুরস্কার-২০২০ ঘোষণা করা হয়েছে। এই বছর পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন ফরাসি বার্তা সংস্থার তিন কাশ্মীরি ফটো সাংবাদিক। ফিচার ফটোগ্রাফিতে পুলিৎজার জেতা এই তিন সাংবাদিক হলেন-দার ইয়াসিন, মুখতার খান এবং ছান্নি আনান্দ।
গতকাল সোমবার পুলিৎজার বোর্ডের পরিচালক ডানা কানাডি বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছেন বলে আজ মঙ্গলবার সংবাদ প্রকাশ করেছে কাতারের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা।
৬ বছর বয়সী মোনেফা নাজিরের ডান চোখে ভারতীয় বাহিনীর রাবার বুলেট লাগে। এই ছবিটি মুখতার খানের তোলা
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিৎজার পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রাচার করা হয়েছে। কাশ্মীরি সাংবাদিকদের বিষয়ে পুলিৎজার ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চলে কাশ্মীরিদের ‘জীবনের লক্ষ্যণীয় বিষয়ের চিত্র’ তুলে ধরায় কাশ্মীরি ফটোগ্রাফারদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।
পুলিৎজারের এই ঘোষণার পর সাংবাদিক দার ইয়াসিন এক ইমেল বার্তায় বলেছেন, সর্বদা একটা ইঁদুর-বিড়াল অবস্থা বিরাজমান ছিল। আর এই জিনিসটাই আমাদেরকে কাজের প্রতি আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ করে তুলেছিল।
জম্মুতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এক বিএসএফ সদস্য। এই ছবিটি ছান্নি আনান্দের তোলা
গত বছর আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরকে স্বায়ত্ত্বশাসিত এলাকার বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের অধীনে নিয়ে আসে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। এর পর কাশ্মীরে যে কোনো ধরনের বিক্ষোভ প্রতিহত করতে ১৪৪ ধারা আরোপসহ টেলিভিশন, মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা কাশ্মীর জনতার এইসব ছবি প্রকাশ করায় এই তিন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়েছে।