অনলাইন ডেস্কঃ

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়েছে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে শুনানির কথা ছিল।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা নিয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে জমা না দেয়ায় শুনানি পেছানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর তরফ থেকে শুনানি পিছিয়ে দেবার আবেদন করা হলে আদালত সেটি মঞ্জুর করে।

জামিন সংক্রান্ত শুনানি পিছিয়ে যাবার পর আদালতে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সাথে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়।

হট্টগোলের এক পর্যায়ে বিচারপতিরা বিব্রতবোধ করে এজলাস ত্যাগ করেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

আগামী বৃহস্পতিবার আবারো জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার আরো কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাকি আছে।

তিনি অভিযোগ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে চরম হট্টগোল করেছে।

“আমাদের এই বয়সে এতোটা হট্টগোল দেখিনি। জনসভায় যে রকম হট্টগোল হয়, তারা সে রকম করেছে,” সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিচারপতিরা এজলাস ত্যাগ করার পরেও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদলত কক্ষে তাদের অবস্থান বজায় রাখেন।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন গতরাতেই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সরকারের চাপের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটি আদলতে জমা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন মি: আলমগীর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব আরো অভিযোগ করেন যে, সরকার মেডিকেল বোর্ড এবং আদালতের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়, খালেদা জিয়া জেলে ‘রাজার হালেই’ আছে।

২০১৮ সালের ২৯শে অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠায় আদালত।

শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গত বেশ কয়েকমাস যাবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে কেবিন ব্লকে চিকিৎসাধীন আছেন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৭ টি মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ টি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে। গত প্রায় দুই বছর ধরে জামিনের চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

জামিন আবেদনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছেন আদালতের সামনে।