সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অর্থকষ্টে ভুগছিলেন সুশান্ত। চারিদিকে বাকি ছিল ধার দেনাও— বক্তব্য তাঁর পরিচারকের। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি।
ওই পরিচারকের বক্তব্য অনুযায়ী, মৃত্যুর দিন দশেক আগে থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেতা। কারও সঙ্গে সে ভাবে কথাও বলছিলেন না তিনি। পরিচারক আরও যোগ করেন, যেহেতু বাজারে থাকা ধার-বাকি মেটাতে হচ্ছে তাঁকে, তাই এই মুহূর্তে তাঁদের বেতন মেটাতে পারবেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন সুশান্ত।
সাড়া না পেয়ে ফিরে যান পরিচারক। আবার আসেন দুপুরের খাবার নিয়ে। তখনও একই ঘটনা। এবার কু-ডাক ডেকে ওঠে পরিচারকের মনে। বার বার দরজা ধাক্কানোর পরেও অভিনেতা সাড়া না দেওয়ায় তিনি ফোন করেন গুরুগ্রামে থাকা সুশান্তের বোনকে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এর পরেই লক ভাঙার মিস্ত্রী ডেকে খোলা হয় সুশান্তের ঘরের দরজা।
দরজার ওপারে তখন শিলিং থেকে ঝুলছে ‘ছিঁছোড়ে’-এর দেহ!
১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি পটনায় জন্মগ্রহণ করেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। পরবর্তীকালে দিল্লিতে চলে আসে তাঁর পরিবার। দিল্লি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও ভর্তি হন। কিন্তু সেইসময় থেকেই থিয়েটারের দিকে ঝোঁকেন তিনি। নাচও শেখেন। তার জন্য পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। অভিনয়ের তাগিদ থেকেই শেষ মেশ মুম্বইয়ে চলে আসেন সুশান্ত। এর পর প্রথমে ধারাবাহিক, এর পর বলিউডে সিনেমার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন সুশান্ত।
‘শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’, ‘পিকে’, ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী’-র মতো ছবিতে অভিনয় করেন সুশান্ত। ভারতীয় ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চরিত্রে তাঁর বায়োপিক ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’-তে তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা কুড়োয়। ‘কেদারনাথ’ ছবিতে তাঁরই বিপরীতে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় সারা আলি খানের।
তবে ২০১৭ সালে তাঁর অভিনীত ‘রাবতা’ ছবিটি বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। গত বছর সুশান্তের তিনটি ছবি মুক্তি পায়। তার মধ্যে ‘ছিছোড়ে’ হিট হলেও, ‘সোন চিড়িয়া’ বক্সঅফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি। ‘ড্রাইভ’ ছবিটি সরাসরি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায়। সব জায়গা থেকেই নেগেটিভ রিভিউ পায় ছবিটি। তাতেই সুশান্ত ক্রমশ ভেঙে পড়ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। দোসর হয়েছিল চরম অর্থকষ্ট। ভালবাসতেন আকাশের তাঁরা দেখতে। মাত্র ৩৪-এই শেষ হয়ে গেল এই তারকার জীবন।
সূত্র:এ বি পি