বাংলাপোস্ট অনলাইনঃ
নির্বাচন কমিশনে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ছোট-বড় নিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল। আইন অনুযায়ী পরপর তিন বছর ইসির কাছে হিসাব না দিলে সে দলের নিবন্ধন বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির। তবু ইসির ডাকে সারা দিচ্ছে না অনেক দল। এদিকে করোনার মধ্যে ২০২০ পঞ্জিকা বছরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আয় কমেছে ৫১ শতাংশ।
আর ব্যয় বেড়েছে ২১ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে বিএনপির। তবে ব্যয় হয়েছে তার চেয়েও বেশি।
নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ। ৩১ জুলাইর মধ্যে এ হিসাব দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও ইসি করোনাকালে এক মাস সময় বাড়িয়েছিল। নিবন্ধিত ৩৯ দলের মধ্যে শুধু বড় কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসির ডাকে সাড়া দিলেও অর্ধেকের বেশি রাজনৈতিক দল এখনো হিসাব জমা দেয়নি। ইসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, আজ বিকাল ৫টার মধ্যে সব দল হিসাব জমা দেবে।
তবে কোনো দল হিসাব জমা দেওয়ার জন্য আরও সময় চাইলে ইসি সে বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী পঞ্জিকা বছরে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব ৩১ জুলাইর মধ্যে ইসিতে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি রেজিস্টার্ড চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে অডিট করাতে হবে। প্রতিবেদনে অডিট কোম্পানি এবং দলের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর বা সিলমোহর থাকতে হবে। তবে আরপিওর ১৯৭২-এর ৯০-এইচ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল পরপর তিন বছর কমিশনে আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হলে সে দলের নিবন্ধন বাতিলের এখতিয়ার রয়েছে কমিশনের।
২০২০-এর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দিতে হবে।
২০০৮ থেকে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে প্রতি বছর আর্থিক লেনদেনের হিসাব দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর। বর্তমানে ইসিতে ৩৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে। ইসি সূত্র জানান, এ বছর বড় দলগুলোসহ বেশির ভাগ দল
নির্ধারিত সময়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি। এমনকি হিসাব দেওয়ার সময় বাড়ানোর জন্যও কমিশনে আবেদন করেনি।তার পরও করোনা সংক্রমণ বিবেচনা করে হিসাব জমা দেওয়ার জন্য এক মাস বাড়তি সময় দেয় কমিশন।
হিসাব জমা দেওয়ার বিষয়ে ইসির উপসচিব মো. আবদুল হালিম খান গত রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কোন কোন দল হিসাব জমা দিয়েছে তা এখনো সব আমার কাছে আসেনি। শেষ সময়ে অনেক দলই হিসাব জমা দেয়। আশা করি ৩১ আগস্টের (আজ) মধ্যে সব দল তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেবে। ’
হিসাব জমা দেওয়ার সময় আর বাড়ানো হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো কোনো দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেনি। করোনার কারণে এমনিতেই কমিশন এক মাস সময় বাড়িয়েছে। তার পরও কেউ সময় চেয়ে আবেদন করলে তা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। তখন কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ’ তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দল হয়তো জমা দিয়েছে। ৭ জুন বার্ষিক (২০২০ পঞ্জিকা বছর) আয়-ব্যয়ের হিসাব ৩১ জুলাইর মধ্যে জমা দিতে নিবন্ধিত সব দলকে চিঠি দিয়েছিল ইসি। পরে আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে আবারও চিঠি দেয় কমিশন।
সূত্রঃবিডি প্রতিদিন