কর্মবিরতির চতুর্থ দিন সন্ধ্যায় এক সমঝোতা বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন জিলানী।
এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে চার দিন কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখানোর পর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন জিলানী।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, স্বাচিপ নেতা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসের ভিত্তিতে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
“জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে, ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের ভোগান্তির কথা ভেবে আমাদের অভিভাবকদের আশ্বাসের ভিত্তিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম। এখন থেকেই আমরা ডিউটিতে যোগদান করব।”
রোববার সন্ধ্যার কিছু আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়।
স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. টিটু মিঞা, ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মারুফ-উল আহসান শামীমসহ আন্দোলনকারী ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বৈঠকে ছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, “সমস্যা নিরসনে সবার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে বিষয়টি সমাধান হচ্ছে।
“এটা শোকের মাস। তাদের কর্মসূচির কারণে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছিল। মানুষ, সমাজের প্রতি শ্রদ্ধার রেখেই তারা এ ঘোষণাটা দেবেন। এটা একটা সুন্দর সমাধান হয়েছে।”
গত সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে শহীদ মিনার এলাকায় মারধর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়া কয়েকজন যুবক।
ওই ঘটনার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এবং উপ-পরিচালককে বিষয়টি জানান। তাদের কাছে প্রতিবাদলিপি দিয়ে ঘটনার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রক্টরকেও স্মারকলিপি দেন তারা।
এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক।
কর্মবিরতিতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন ঘটেছে কিনা, সেই প্রশ্নে হাসপাতালের পরিচালক রোববার দুপুরে বলেন, হাসপাতালে সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার চিকিৎসক কাজ করেন। এ কারণে ইন্টার্নরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার পরও চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক রাখতে কোনো ‘সমস্যা হয়নি’।
“তারা আমাদের ভালো সাপোর্ট দেয়। কর্মবিরতিতে থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আমাদের এখানে বিভিন্ন কোর্স করতে আসা চিকিৎসক, প্রশিক্ষণে আসা চিকিৎসক, অবৈতনিক চিকিৎসক রয়েছেন অনেক। আমরা তাদের কাজে লাগিয়েছি, ফলে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।”