বাংলাদেশে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন; তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৪৮৬০টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে দেশে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৫৯৭টি। তিন মাস পরে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৪৫৭টি।
সিপিডির ডিস্টিংগুইশড ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ‘দেশে যে আয় বৈষম্য রয়েছে তা কোটিপতি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তবে এর মাধ্যমে প্রকৃত কোটিপতির পরিমাণ নির্ণয় করা যাবে না, কারণ অনেকে টাকা পাচার করে বিদেশের ব্যাংকে জমা রাখে। এছাড়া ক্যাশ টাকা ব্যাংকে না রেখে বিভিন্ন খাতে যারা বিনিয়োগ করছে, তাদের সম্পদের পরিমাণটাও এখানে আসছে না’।২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস প্রকোপ শুরুর সময় দেশের ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টের (ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা ছিল ৮২,৬২৫। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংকখাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭১ হাজারের বেশি। যার মধ্যে কোটিপতিদের টাকার পরিমাণ ৬ লাখ ৮০ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা বলছেন, কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সবগুলোই ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট নয়। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টও আছে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট আছে।
১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা বর্তমানে রয়েছে ৮৫,৮৪৮টি। এসব হিসাবে মোট টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। যা মোট আমানতের ১১.২৪ শতাংশ। ৫০ কোটি থেকে উপরের হিসাবের সংখ্যা রয়েছে ১৮০৫টি। যাতে টাকা রয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি। এটি মোট আমানতের ১৫.০৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া হিসাব অনুয়ায়ী, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা ছিল ৫টি, যা ১৯৭৫ সালে ৪৭টিতে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে ছিল ৯৮টি, ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি, ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩টি এবং ২০১৫ সালে ৫৭ হাজার ৫১৬টি।