আজকের অবস্থার কারণ অনুসন্ধান তাই নাগরিকদের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব আরও বেশি গবেষক ও সাংবাদিকদের। শুধু চালক আর শ্রমিকদের ওপর দোষ চাপিয়ে এই কারণ বোঝা যাবে না। শুধু কর্মকর্তাদের দুর্নীতি দিয়েও বোঝা যাবে না। দেখতে হবে বিপুল ব্যয়ের পেছনে রেলওয়ে বিদ্বেষী নীতিমালার স্বরূপ। বিশ্বব্যাংক, এডিবি পরিচালিত প্রকল্পে দুর্নীতি একটি অংশ, আরেকটি অংশ রেলওয়েকে অকার্যকর করার নীতি ও সিদ্ধান্ত।
নিরাপদ ভ্রমণের শেষ আশ্রয় রেলওয়ে এখন মুখ থুবড়ে পড়ছে। অথচ গত ১০ বছরে রেলওয়ে-তে ব্যয় হয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে আছে বিদেশি ঋণযুক্ত বহু প্রকল্প। বর্তমানে সোয়া লাখ কোটি টাকার ৪৮ টি প্রকল্প চলছে। কিন্তু রেললাইনের নাটবল্টু ঠিক নাই। সেতু ভাঙাচোরা। রেলের ৪ হাজার একর জমি দখলে। ২৭৮টি ইঞ্জিনের ১৯৫টির আয়ুষ্কাল শেষ, ১৬৩৫টি বগির মধ্যে ৯০০টির শেষ অবস্থা। দক্ষ জনশক্তি নাই, ছাঁটাই হয়েছে, নানাস্থানে বেসরকারিকরণ হয়েছে। স্টেশন হয়েছে, রেললাইন বন্ধ হয়েছে। সবই হয়েছে এসব প্রকল্পের অধীনে। এই টাকা কতো কনসালট্য্যান্টের পকেটে, কতো বিদেশ সফর আর সরকারি পকেটে গেল তা হিসাবে আসে না।
লেখকঃ অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়