অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, সংবিধানে লেখা আছে বাংলাদেশের মালিক জনগণ। কিন্তু এখন দুর্নীতিবাজেরাই দেশের মালিক হয়ে গেছে। ক্ষমতার মালিক দুর্নীতিবাজেরা। তারা যা চান, তাই হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযান আমরা রাজশাহীতেও দেখতে চাই। শনিবার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে পার্টির এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীতে যারা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে প্রশাসন এখনও তাদের পাহারা দিয়ে রেখেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এমন অবস্থা চলতে পারে না। তিনি আরও বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। এ বিষয়ের পক্ষে থাকায় আমাদের নামে মিথ্যা প্রচার করা হয়। কিন্তু আমরা ভয় পাই না। যতই কুৎসা রটনা করা হোক না কেন, তা সব সময় মিথ্যা। আর মিথ্যা বালুর বাঁধ, যা সামান্য বাতাসেই ভেঙে যায়। আমরা এমন রাজনীতি করি না যে আমাদের পকেটে কোটি টাকা থাকে। আর আমি কখনও কাউকে ভয় পাই না। রাজশাহীর মানুষের জন্য আমার বাকি জীবন। ন্যায় এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম চলবেই। বাদশা বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে ২২টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যারা এ দেশের টাকা পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিত। তাদেরকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জিত হলো। কিন্তু অর্থপাচার থামেনি। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, যে পরিমাণ টাকার বাজেট করা হয় সেই পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। যারা এখনও দেশের টাকা পাচার করে তারা নব্য রাজাকার। এসব নব্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।’ রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি বাদশা বলেন, গণমাধ্যম যখন সত্য প্রকাশ করে তখন সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়। দুর্নীতিবাজদের নাম প্রকাশ করলে হুমকি দেয়া হয়। কিছু দিন আগে রাজশাহীতে এক সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা সত্য প্রকাশের স্বাধীনতা চাই। লুটেরাদের গ্রেফতার দেখতে চাই। প্রশাসনকে লুটেরাদের দিকে নজর দিতে হবে। সমাজে যারা অস্থিরতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর সমালোচনা করে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মিজানুর রহমান মিনু মেয়র থাকাকালে জেএমবিকে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা দিতেন। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলার আগে বাংলা ভাই এ কথা জানিয়ে গিয়েছে। আজ সেই মিনু প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করেন। তিনি মেয়র থাকাকালে দুর্নীতি করেছেন। ফ্রিডম পার্টি, রাজাকার, জঙ্গিবাদকে সহায়তা করেছেন। জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। পার্টির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সব সময় বঞ্চিত, শোষিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে। যে নীতি এবং আদর্শ নিয়ে পার্টি এগিয়ে যায়, সেটা মনে রেখেই নেতাকর্মীদের দলের জন্য কাজ করতে হবে। সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ওয়ার্কার্স পার্টিকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির একাদশ সম্মেলন উপলক্ষে এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন ওয়ার্কার্স পার্টি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। আর দলীয় পতাকা তোলেন সমাবেশের বিশেষ অতিথি পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য নুর আহমেদ বকুল। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু। সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবুর পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নারী মুক্তি সংসদের রাজশাহী জেলা সভাপতি অধ্যাপক তসলিমা খাতুন, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সাব্বা আলী খান কলিন্স, জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা।
বাংলাপোস্ট২৪/ জামিল
বাংলাদেশ সময়:২৩৩২ ঘন্টা ,১৯অক্টোবর ২০১৯
সূত্র :বিডি-প্রতিদিন