রমজানে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখাকে সরকার যে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে- কর্তা ব্যক্তিদের তৎপরতায় তেমনটিই মনে হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পণ্য মজুদ করে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে সে জন্য নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে। চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অবৈধ মজুদদারি ঠেকাতে এবং পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনারদের চিঠি লিখেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। স্বল্প আয়ের মানুষকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দিতে সারা দেশে ১৮৭টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক নিয়ে বাজারে নেমেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিআইবি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ১৮ লাখ টন হলেও পবিত্র রমজান মাসে এ চাহিদা থাকে তিন লাখ টন।
চলতি অর্থবছরের ৯ মার্চ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৬৯ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। আর এই সময়ে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৭ লাখ ৬৬ হাজার টনের। চিনির বার্ষিক চাহিদাও ১৮ লাখ টন এবং রমজানে ৩ লাখ টন। ৯ মার্চ পর্যন্ত চিনি আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৭৩ হাজার টন এবং এই সময়ে এলসি খোলা হয়েছে ১২ লাখ ৪৭ হাজার টন। রোজার ইফতারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় শসা এবং বেগুন জাতীয় সবজি। বর্তমানে এ দুটি পণ্যের সরবরাহ সন্তোষজনক এবং কারসাজি না হলে রমজানে দাম খুব বেশি বাড়ার কথা নয়। সরকার বাজারের দিকে সতর্ক নজর রাখলে বিশেষ করে পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধে সক্ষম হলে রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় মাত্রায় থাকার কথা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি পরিবহন চাঁদাবাজিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো অসৎ সদস্য জড়িত। রাজনৈতিক টাউট এবং তথাকথিত শ্রমিক নেতারা পরিবহন চাঁদাবাজির অন্যতম হোতা। মাহে রমজানে ঈদকে সামনে রেখে তারা আগ্রাসী চেহারায় আবির্ভূত হয়। রোজায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এসব অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি সরকারের সুনামে যেহেতু বিসংবাদ সৃষ্টি করে সেহেতু অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব থাকাই বাঞ্ছনীয়।