অনলাইন ডেস্ক :

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, মি. জনসনের দেহে জ্বর এবং কাশিসহ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘মৃদু উপসর্গ ‘ দেখা দিয়েছে, এবং তিনি ডাউনিং স্ট্রিটেই আইসোলেশনে অর্থাৎ সবার থেকে আলাদা হয়ে থাকবেন।

তবে করোনাইরাস সংকট মোকাবিলায় ব্রিটেনের সরকারের প্রয়াসের নেতৃত্ব তিনিই দেবেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়। তবে বিবিসির সংবাদদাতা নিক ইয়ার্ডলি জানাচ্ছেন, মি. জনসন দায়িত্ব পালনে অক্ষম হবার মতো অসুস্থ হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক র‍্যাব দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানানো হয়েছে।

তবে মি. জনসনের কাছাকাছি দেখা গেছে সরকারের এমন আরো কতজনকে এখন আইসোলেশনে যেতে হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এক টুইট বার্তায় মি. জনসন বলেন, “গত ২৪ ঘন্টায় আমার দেহে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে এবং পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়েছে।”

এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইংল্যান্ডের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ক্রিস হুইটির ব্যক্তিগত পরামর্শে ৫৫ বছর বয়স্ক মি. জনসন করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষা করান। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএসের কর্মীরা ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটেই এই টেস্ট করানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাতেই মি. জনসনকে সবশেষ প্রকাশ্যে দেখা যায়। বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম করোনাভাইরাসে সংক্রমণের কথা জানালেন।

তবে তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তার সরকারের কতজন সদস্যকে আইসোলেশনে যেতে হতে পারে তা স্পষ্ট করা হয় নি।

বুধবার পার্লামেন্টে মি. জনসনের পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক
বুধবার পার্লামেন্টে মি. জনসনের পাশে বসা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক

স্বাস্থ্যমন্ত্রীও সংক্রমিত

মি. জনসনের ঘোষণার কিছু পরই ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এক বার্তায় জানান, তিনিও কোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।

তিনি জানান, তার দেহেও মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তিনি স্বেচ্ছা-আইসোলেশনে আছেন, এবং বাড়ি থেকে কাজ করবেন।

ব্রিটেনে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৬শরও বেশি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং ৫৭৮ জন মারা গেছেন।

ব্রিটেনের যেসব বিজ্ঞানী করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে গবেষণা করছেন তারা সরকারগুলোকে হুঁশিয়ার করে বলছেন, লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে হলে তাদের অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এই গবেষণায় বলা হয়েছে, রোগীদের পরীক্ষা করা, তাদের আলাদা করে ফেলা এবং সামাজিকভাবে মানুষকে কিছুদিন বিচ্ছিন্ন করে রাখতে না পারলে ব্যাপক হারে প্রাণহানি ঘটবে।

তারা সতর্ক করছেন যে উন্নয়নশীল দেশে, যেখানে পরিবারের আকার বড় এবং তাতে বয়োবৃদ্ধ সদস্য রয়েছেন, সেখানে এই মহামারির ফল হবে বিরাট এক বিপর্যয়।

করোনাভাইরাস সংকট সামাল দিতে ব্রিটিশ সরকার অবসরে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের নতুন করে কাজে যোগ দিতে বলছে। তাদের বলা হচ্ছে, তারা পূর্ণকালীন অথবা চাইলে স্বল্প মেয়াদে চাকরিতে ফিরতে পারেন।

যারা অবসরে যাওয়ার মুখে রয়েছেন, তাদেরকে চাকরিতে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এর আগেই এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক খবরে বরা হযেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অথবা আক্রান্ত হয়েছে সন্দেহে লন্ডন পুলিশের ২০ শতাংশ সদস্য ঘরে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

সূত্র: বি বি সি বাংলা