করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বেশিরভাগ দেশ ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করায় প্রবাসে কর্মরত বিপুল সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক ইতোমধ্যে চাকরি হারিয়ে বাধ্য হয়েছেন দেশে ফিরে আসতে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী ছয়মাসে সৌদী আরব থেকে একলাখ ১৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী চাকরি হারিয়ে ফিরে আসতে পারেন। তবে এতে শংকিত হবার কিছু নেই বলে মনে করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টাও করে যাচ্ছে সেখানকার দূতাবাস। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, সৌদী আরব বা মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশী কর্মীরা যেসব কাজে নিয়োজিত সেগুলোতে চাকরি যাওয়ার সুযোগ কম।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চে ফ্লাইট চলাচল বন্ধের আগে পর্যন্ত দেড় থেকে দুই লাখ প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদী আরব থেকেই ফিরেছেন ৪১ হাজার ৬৬১ জন। ফ্রি ভিসায় বা স্পন্সর নিয়ে সৌদী আরবে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা ৩ লাখ। করোনার কারণে তারা সবাই কাজ হারাতে পারেন। 

তবে সৌদী আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলছেন, ফ্রি ভিসায় আসা কর্মীদের মধ্যে এক লাখ কর্মীকে দেশে ফিরতে হতে পারে। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা বিশ লাখের বেশি কর্মীর ১৪ থেকে ১৫ হাজার চাকরি হারাতে পারেন। 

এখনই ভীত হওয়ার কারণ না থাকলেও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী কর্মীর চাপ সামলাতে হতে পারে বলে মনে করছেন অভিবাসন বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। 

ব্রাকের অভিবাসন কর্মসূচী প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশের অভিবাসন খাত বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হলে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।এছাড়া যাদের পাসপোর্ট বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেগুলো যেন নতুন করে অনুমোদন করে আবার কাজে ফিরতে পারে বা যাদের যাওয়ার পরিক্লপনা ছিল তারা যেন ঠিক মত যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।      

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ২৪ লাখ কর্মীর মধ্যে এ পর্যন্ত ফিরে আসাদের সংখ্যা খুবই সামান্য। তাছাড়া পুরো বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। 

তিনি আরও বলেন, অনেকে ভাবছেন যে দশ বিশ লাখ লোক চলে আসবে, তবে আমার মনে হয়না এতো আসবে। প্রবাসীরা যে ধরনের কাজ করেন সে ধরনের কাজ ওইদেশের নাগরিকরা তেমন করে না। আমরা সেসব দেশকে বলেছি যে যাদের চাকরি একটি কোম্পানীতে শেষ হলে অন্য কোম্পানীতে যাতে চাকরির অনুমতি দেয়া হয়।