বিদেশি কর্মীদের পরে এ বার বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভিসা নীতিও বদল করছে অ্যামেরিকা। অনলাইন ক্লাস চললে দেশে ফিরতে হবে পড়ুয়াদের।
অনলাইন ক্লাস হলে ছাত্রছাত্রীদের অ্যামেরিকায় থাকার ভিসা দেওয়া হবে না। জানিয়ে দিল মার্কিন অভিবাসী দফতর। এর ফলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়লেন। অভিবাসী দফতরের নোটিস মেনে দ্রুত তাঁদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে।
মূলত দুই ধরনের ভিসা নিয়ে অ্যামেরিকায় পড়াশোনা করতে যান বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা। ননইমিগ্রান্ট এফ১ এবং এম ১ ভিসা। অ্যামেরিকার বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা অ্যাকাডেমিক কোর্স করতে যান তাঁদের এফ১ ভিসা দেওয়া হয়। যাঁরা ভোকেশনাল কোর্স করতে যান, তাঁদের দেওয়া হয় এম১ ভিসা।
এর আগে বিদেশিদের কাজের ক্ষেত্রে ভিসা দেওয়া নিয়ে আইন কঠোর করেছিল অ্যামেরিকা। এ বার কোপ পড়ল ছাত্রছাত্রীদের উপর। পরিসংখ্যান বলছে, এর ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চীন এবং ভারতের ছাত্রছাত্রীরা। এই দুই দেশের পড়ুয়াই সব চেয়ে বেশি।
করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করার পরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনলাইনে পড়ানোর ব্যবস্থা করে। এখনও অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েই অনলাইনে ক্লাস চলছে। সামনেই শীতকালীন সেমেস্টার। অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিয়েছে, ওই সেমেস্টারের ক্লাসও অনলাইনেই হবে। হার্ভার্ডের মতো কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ফিরতে পারেন, কিন্তু ক্লাস অনলাইনেই হবে।
এই পরিস্থিতিতেই নতুন ভিসা নীতি নিতে চলেছে মার্কিন অভিবাসন দফতর। তাদের বক্তব্য, অনলাইন ক্লাস হলে ছাত্রছাত্রীদের ভিসা দেওয়া হবে না। তাদের ফিরে যেতে নিজেদের দেশে। নতুন কোর্সের জন্যও এখন ভিসা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ এই নিয়ম না মানলে অভিবাসন আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
প্রায় ১০ লাখ বিদেশি ছাত্রছাত্রী অ্যামেরিকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য যান। অ্যামেরিকায় উচ্চ শিক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশই বিদেশি ছাত্রছাত্রী। ২০১৮ সালে শুধুমাত্র বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের থেকে অ্যামেরিকার লাভ হয়েছিল ৪৪ দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেই লাভের কথাও আর ভাবতে চাইছে না অ্যামেরিকা।
অ্যামেরিকায় করোনাই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, এই পরিস্থিতিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে দ্রুত সমস্যার সমাধানই তাদের লক্ষ্য।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, রয়টার্স)