বাংলাপোস্ট২৪ ডেস্ক:
সনাতন ধর্মীয়দের দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ-বিজিবি) সহায়তায় বসলো ভারত-বাংলাদেশের নাগরিকদের মিলন মেলা। সোমবার কয়েক ঘণ্টার এই উৎসবে মেতেছিলেন দুই দেশের স্থানীয় লোকজনের স্বজনরা। ছুঁয়ে দেখতে না পারলেও এক ঝলক দেখা আর সামনাসামনি খানিকটা কথা বলার সুখস্মৃতি নিয়ে ফিরলেন সবাই। প্রতি বছরের মতো এবারও পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর সীমান্তে সোমবার সকালে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে এই মিলন মেলা বসে। ভারতীয় বিএসএফ ও বাংলাদেশি বিজিবির জোয়ানরা সতর্ক প্রহরায় স্থানীয়দের সাথে দেখা সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেন। এতে উভয় দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিজিবি-বিএসএফ সদস্যদের মধ্যেও মতবিনিময় করতে দেখা যায়।
বিজিবি সূত্র জানায়, সনাতন ধর্মীয়দের দ্বিতীয় বড় উৎসব শ্যামাপূজা (দীপাবলি) উপলক্ষ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা সীমান্তের কাঁটাতারের গেট খুলে দেয়ায় দুই দেশের স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি উভয় দেশের অভ্যন্তরে থাকা স্বজনরা একে অপরের সাথে সাক্ষাত করে কুশল বিনিময় করেছেন। এসময় কেউ কেউ অনেক দিন পর প্রিয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীদের সাক্ষাৎ পেয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। অনেকে হাস্যোজ্জল চোখে মুখে প্রিয় স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। চোখে চোখ রেখে জীবনের নানা গল্প সেরে নির্বিঘে আপন আপন বাড়িতে ফিরে যান।
দুই দেশের নাগরিকদের মিলন মেলা দেখতে গিয়েছিলেন পাটগ্রাম উপজেলার তরুন শামসুদ্দোহা (২৫) ও জোংড়া ইউনিয়নের শিউলী রানীসহ অনেকে। শামসুদ্দোহা বলেন, ‘অনেক সময় ভারতীয় বিএসএফ জোয়ানদের সীমান্তে অহেতুক মারমুখী আচরণ দেখা যায়। কিন্তু এই শ্যামাপূজা উপলক্ষ্যে উভয় দেশের নাগরিকদের এই মিলন মেলায় আজকে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখিয়েছে। এতে শুধু দুই দেশের নাগরিকদের মাঝেই নয়; বিজিবি-বিএসএফের মধ্যেও সম্পর্কের আরো নতুন মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, ‘কুচলিবাড়ী ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা প্রথমে বাংলাদেশিদের ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়ার নিকট যেতে বাঁধা দিলেও পরে শর্ত সাপেক্ষে যাওয়ার অনুমতি দেন। সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাঁটাতারের দুই পাশ থেকে আগত লোকজন তাদের স্বজনদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করেছেন। পরে দীপাবলি পূজা উপলক্ষ্যে বিএসএফের শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে সবাইকে খিচুরি দেয় তারা।
বাউরা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসুনীয়া বলেন, ‘প্রতি বছর শ্যামাপূজা উপলক্ষ্যে নবীনগর সীমান্তে বিএসএফের কঠোর পাহারায় দুই দেশের কিছু নাগরিকের দেখা-সাক্ষাত হয়। এতে উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে যেমন সম্পর্কের উন্নতি ঘটে তেমনি বিজিবি-বিএসএফের মধ্যেও সুসম্পর্কের এক সেতুবন্ধন তৈরি হয়।রংপুর-৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল ইসাহাক আলী বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফের মধ্যকার এক চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বাউরা নবীনগর সীমান্তে যা হয়েছে, এটি উভয় বাহিনীর সুসম্পর্কের একটি নির্দশন। তবে সীমান্তে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য বিজিবি-বিএসএফের যৌথটহল ব্যবস্থাও রয়েছে।

বাংলাদেশ সময় :১১৩৬ঘন্টা ,১০ নভেম্বর ২০১৯
বাংলাপোস্ট২৪/ সাফিউল