এস, এম, হক , নিউইয়র্ক থেকে ,
নিউইয়র্ক নগর সংলগ্ন লং আইল্যান্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশি শিশু মারা গেছেন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আপন ভাই, নানা ও নানী । তাদের মধ্যে ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশি একটি পরিবারের নবম গ্রেডের ছাত্রী রিফাত আরা আলী (১৩) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে। তার একমাত্র ভাই রাইম সাদমান জিম (১৭) গুরতর দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। দগ্ধ হয়েছেন নানা শামসুল হক (৮২) ও নানী দিল আফরোজ (৭১) অগ্নিদগ্ধ না হলেও প্রচণ্ড ধোঁয়ায় জ্ঞান হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কন্সাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ তিনজনকেই নাসাউ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তিনি ভিকটিম পরিবারের খোঁজ-খবর রাখছেন। নিহত এবং অগ্নিদগ্ধরা যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীণকার্ডধারী বলে তিনি জানিয়েছেন।
নাসাউ কাউন্টির চীফ ফায়ার মার্শাল মাইকেল উত্তারো জানান, গত ২ অক্টোবর শনিবার স্থানীয় সময় ভোর পৌণে ৬টায় অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর কর্মীরা
এলমন্টের মার্শাল স্ট্রীটে অবস্থিত মোহাম্মদ আলীর বাসায় যান । ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান যে, আগুনের
লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলছে । বাসার ভেতরে আটকে রয়েছেন এক শিশু, এক টিনেজার, প্রবীণ দুই ব্যক্তি।
আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে নিকটবর্তী এলাকাসমূহের স্বেচ্ছাসেবক অ্যাম্বুলেন্স ও দমকলবাহিনীরাও গাড়িসহ জড়ো হয়।পরে হেলিকপ্টার টহল দেয় বিশেষ প্রয়োজন মেটাতে। পুরো এলাকার মানুষ মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । গুরুতর আহত অবস্থায় রিফাত, জিম, শামসুল হক এবং দিল আফরোজকে জ্বলন্ত বাসার ভেতর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। ৩ অক্টোবর সোমবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিফাত।
জানা গেছে , অগ্নিকাণ্ডের সময় চাঁদপুরের সন্তান মোহাম্মদ আলী কাজে ছিলেন। তার স্ত্রী সামিনা শামস আলী ভোর সাড়ে ৪টায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা ছাড়েন। আধা ঘণ্টা পরই টেলিফোনে জানতে পারেন বাড়িতে আগুন লাগার কথা। ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার সন্তান সামিনা শামস আলীর খোঁজ নিতে ওজোনপার্কে তাদের এক পারিবারিক বন্ধুর বাসায় যান ডেপুটি কন্সাল জেনারেল। সে সময় তিনি ছিলেন নির্বাক। একমাত্র কন্যা হারানোর শোকে আচ্ছান্ন। একমাত্র পুত্রকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। মা এবং বাবা এখনও জীবন-মৃত্যুর সন্ধিখানে।
জানা গেছে, মেয়ে এবং দুই নাতিকে দেখার জন্য গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে এসেছেন সামিনার মা-বাবা। তাদের ফিরে যাবার কথা ২৫ অক্টোবর। এমনি অবস্থায় এই পরিস্থিতিতে উভয়ের পাসপোর্ট পুড়ে ছাই।