অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ১২ই ডিসেম্বর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। পুরো দেশ জুড়েই এখন নির্বাচনী হাওয়া, সারা ব্রিটেন জুড়ে চলছে প্রচারাভিযান, আর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-বিতর্কে সরগরম সংবাদ মাধ্যম আর সোশ্যাল মিডিয়া।
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এমন একটি নির্বাচন হয়তো আর কখনোই হয়নি – যেখানে পুরো দেশটা মনে হচ্ছে যেন দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে ।
এর কারণ একটাই – ব্রেক্সিট, অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ। এই নির্বাচনকেই বলা হচ্ছে ‘দ্য ব্রেক্সিট ইলেকশন। ‘
বিবিসির রাজনৈতিক সংবাদদাতা রব ওয়াটসন বলছিলেন, এটাকে আসলেই বলা যায় ব্রেক্সিট নির্বচন, কারণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে এবং বিপক্ষের দুই শিবিরের কে কেমন ভোট পায় – কোন পক্ষ ঐক্যবদ্ধ এবং কোন পক্ষ বিভক্ত – এবং তার ওপরই সব নির্ভর করছে। কোন পক্ষ বেশি ঐক্যবব্ধ – সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ পার্টির নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এখন হয়ে উঠেছেন ব্রেক্সিটপন্থীদের সবচেয়ে বড় নেতা। তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে ব্রেক্সিট কিভাবে হবে তা নিয়ে একটি চুক্তি করে এসেছেন, কিন্তু পার্লামেন্টে তা পাস করাতে পারছেন না – কারণ কনসারভেটিভদের কমন্স সভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের ব্রেক্সিট বিষয়ক সম্পাদক দিয়া চক্রবর্তী বলছেন, “যদি এ নির্বাচনে বরিস জনসন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান – তাহলে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।”
“কারণ বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, তারা ক্ষমতায় গেলে ইইউ’র সাথে নতুন একটি চুক্তি করবে এবং একটি নতুন গণভোট করবে যাতে ভোটাররা চাইলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের থেকে যাবার পক্ষেও ভোট দিতে পারবেন। আর অপর বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বলছে ,তারা ইইউতে থাকতে চান এবং ক্ষমতায় গেলে সাথে সাথেই ব্রেক্সিট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবেন।”
ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করবে কিনা – এ প্রশ্নে ২০১৬ সালের এক গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ত্যাগের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু একে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের রাজনীতিতে, পার্লামেন্টে এবং নাগরিক সমাজেও তৈরি হয়েছে তীব্র বিভক্তি।
জনমত জরিপে কনসারভেটিভরাই এগিয়ে
অবশ্য এ বিভক্তি ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন এবং তার কনসারভেটিভ পার্টিকে সহায়তা করতে পারে। জনমত জরিপেও দেখা যাচ্ছে তারাই এগিয়ে।
রব ওয়াটসন বলছেন, “২০১৬ সালের গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে যারা ভোট দিয়েছিল তারা সবাই যদি এক হয়ে বরিস জনসনের পার্টিকে ভোট দেয়, এবং ইইউতে থাকার পক্ষের ভোট ভাগ হয়ে যায় অন্য নানা দলের মধ্যে – যেমন লেবার পাটি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, গ্রিন পার্টি বা স্কটল্যান্ডের এসএনপি – তাহলে কনসারভেটিভরাই নির্বাচনে ভালো করবে।”
জন ওয়াটসন বলছেন, “বরিস জনসনের পক্ষে যে সমর্থন দেখা যাচ্ছে তা আসলে বিকল্প নেই বলেই। কারণ তিনি আশা করছেন ব্রেক্সিট সমর্থক ১ কোটি ৭৪ লাখ ভোটার সবাই তাকেই ভোট দেবে কারণ তাদের আর কোথাও যাবার জায়গা নেই। তাই বরিস জনসন যদি জেতেন – তিনি এ জন্যেই জিতবেন।”
কিন্তু বরিস জনসন এমন একজন রাজনীতিবিদ, যাকে নিয়ে ব্রিটেনে অনেক বিতর্ক আছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ – তিনি অনবরত মিথ্যে বলছেন, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে, এমনকি তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও নানা গল্প আছে, এমনকি তার সন্তানের সংখ্যা কত – তা নিয়েও নানা গল্প আছে।
অন্যদিকে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনও রাজনীতিবিদ হিসেবে জনপ্রিয় নন।
“এটা ঠিক যে কনসারভেটিভ পার্টি জনমত জরিপগুলোতে এগিয়ে আছে – কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে এ নির্বাচনে লোকে যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তাকে ভোট দিচ্ছে তা নয়, বরং ভোট দেবে যে সবচেয়ে কম অজনপ্রিয় -তাকে।”
“এটাও মনে রাখতে হবে যে মি. জনসন একজন গভীরভাবে অজনপ্রিয় এবং বিতর্কিত রাজনীতিবিদ। কিন্তু এটা একটা ভোটের লড়াই, এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন হচ্ছেন তার চেয়েও অজনপ্রিয়। কাজেই এ নির্বাচনে যে-ই জিতুন না কেন – তিনি জনপ্রিয় হবেন না” – বলেন রব ওয়াটসন।
কিন্তু মি. করবিনের ক্ষেত্রে অনেকেই আপত্তি তুলছেন এই বলে যে তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মর্সূচি অতিমাত্রায় বামপন্থী, এবং তার সরকার বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সেবাখাতে খরচ করবেন, ব্রিটেনের ধনীদের ওপর বেশি করে কর বসাবেন এবং এতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিঘ্নিত হবে।
তা ছাড়া ব্রেক্সিটের ব্যাপারে জেরেমি করবিনের অবস্থান হচ্ছে, তিনি লেবার পার্টির ভেতরে ব্রেক্সিটপন্থী এবং ব্রেক্সিট-বিরোধী উভয় পক্ষকেই সন্তুষ্ট রাখতে চান, তাই কোন স্পষ্ট নীতি নিচ্ছেন না -এটিও হয়তো তার বিরুদ্ধে কাজ করছে, অন্তত জনমত জরিপে।
বিভক্ত ব্রিটিশ সমাজ
যুক্তরাজ্যের ভোটারদের এক অংশ বলছেন, যেহেতু দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে গণরায় এসেছে – তাই ব্রিটেনকে ইইউ ত্যাগ করতেই হবে।
অন্যদিকে আরেক অংশ বলছেন, ব্রেক্সিট হলে ব্রিটেনের অর্থনীতির গুরুতর এবং সুদূরপ্রসারী ক্ষতি হবে – তাই ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেন-ইইউ সম্পর্ক ও বাণিজ্য কিভাবে চলবে তা নিয়ে একটি সুস্পষ্ট চুক্তি হতে হবে, এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার আগে এ প্রশ্নে দ্বিতীয় আরেকটি গণভোট করতে হবে ।
ব্রেক্সিটপন্থীরা বলছেন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের অংশ থাকার ফলে নানা ভাবে ব্রিটেনের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে, এবং ইউরোপ থেকে ব্যাপকহারে অভিবাসন হচ্ছে – যার চাপ ব্রিটেনের অবকাঠামো সামলাতে পারছে না।
এ নিয়েই লেগেছে বিরোধ – এবং গণভোট হয়ে যাবার পর ব্রেক্সিট বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে বার বার ভোট, দলত্যাগ, আদালতে একাধিক মামলা, পার্লামেন্ট স্থগিত করা, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ – ইত্যাদি নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটেছে।
এতে অনেকে বলছেন, ব্রিটেনে রাজনীতিবিদদের ওপর জনগণের আস্থাই কমে যাচ্ছে।
দিয়া চক্রবর্তী বলছেন, “এর কারণ, ভোটাররা দেখছে যে তারা গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিলো কিন্তু তিন বছরেও ব্রেক্সিট হলো না। বরং এমপিরা তাদের ভোট নিয়ে পার্লামেন্টে গিয়ে ব্রেক্সিট ঠেকানোর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। ব্রেক্সিটের চুক্তি বার বার পার্লামেন্টে ভোটে হেরে যাচ্ছে। তাই তারা মনে করছে, তাহলে ভোট দিয়ে কী লাভ!”
বিভক্তির মূলে কী আছে?
কিন্তু ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের মধ্যে এরকম ব্রেক্সিট প্রশ্নে বিভক্তি তৈরি হয়েছে কেন?
দিয়া চক্রবর্তী বলছেন, “এটা অনেকটা আইডেনটিটি বা আত্মপরিচয়ের সম্পর্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে শুরু থেকেই ব্রিটেন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সম্পর্ক ঠিক কতটা ঘনিষ্ঠ হবে, তা নিয়ে দুরকমের মত ছিল। ইউরোপের অনেক দেশ ইউরোকে মুদ্রা হিসেবে গ্রহণ করেছে, কিন্তু ব্রিটেন তার নিজ মুদ্রা পাউন্ড বহাল রেখেছে, শেংগেন নামের বিশেষ ভিসামুক্ত অঞ্চলেও ব্রিটেন যোগ দেয় নি।”
“অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যেভাবে ‘এভার ক্লোজার ইউনিয়নের’ কথা বলছে – তাতে ব্রেক্সিটপন্থীরা মনে করেন যে ইইউ যদি একটি বৃহৎ ফেডারেল সুপারস্টেট হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাধীন সত্তা হুমকির মুখে পড়বে। অন্যদিকে ব্রিটেনে যারা ইইউতে থাকার পক্ষে তারা মনে করেন যে তারা ইউরোপীয় পরিচয়কে ধারণ করতে চান।” – বলেন দিয়া চক্রবর্তী।
রব ওয়াটসন বলেন, ব্রেক্সিট ইস্যুটি এমনভাবে ব্রিটেনকে বিভক্ত করে ফেলেছে যে – সপ্তদশ শতকের পর গত তিনশ’ বছরে এমনটা আর হয়নি । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনে আর কখনো এত গভীর রাজনৈতিক সংকট দেখা যায় নি।
“এই যে বিভক্তি – এর দুটো দিক আছে। ব্রিটেনের রাজনীতিতে বহুকাল ধরেই লেবার ও কনসারভেটিভ এই দুই দলেরই প্রাধান্য চলছে। দু’দলেরই অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতির মুলে ছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যপদ। ফলে ইইউ ত্যাগের ব্যাপারটা তাদের ভেতর এক বিরাট আলোড়ন তৈরি করবে এটাই স্বাভাবিক।”
“আরেকটা হচ্ছে ব্রিটেনের সমাজে বহুকাল ধরে চলে আসা নানা রকম বিভক্তি। উচ্চশিক্ষিত এবং অল্পশিক্ষিতদের মধ্যে বিভক্তি, অভিবাসন নিয়ে বিভক্তি, কেউ মাল্টিকালচারাল ব্রিটেনের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। ব্রেক্সিট এই বিভক্তিগুলোকে আরো প্রকট করে তুলেছে” – বলেন রব ওয়াটসন।
উপদল, দ্বন্দ্ব, কোন্দল প্রধান দুই দলে
ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ভিন্ন ভিন্ন দলের মধ্যেই যে শুধু তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে তাই নয়, একেকটি দলের ভেতরেও এত তীব্র উপদলীয় দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে যে একে কেন্দ্র করে কনসারভেটিভ পার্টির কয়েকজন দল ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন, কয়েকজনকে দলের অবস্থানের বিপরীতে ভোট দেবার জন্য পার্টি থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে।
এরকম কয়েকজন আবার নতুন দল গঠন করেছেন। লেবার ও কনসারভেটিভ উভয় দলের কেউ কেউ প্রকাশ্যেই বলেছেন, তারা ব্রেক্সিটকে ঠেকানোর জন্য এবার লিবডেমকে ভোট দেবেন – যেরকম কথা আগে ব্রিটিশ রাজনীতিতে অনেকেই শোনে নি।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের এবার নির্বাচনী শ্লোগানই হচ্ছে ‘গেট বেক্সিট ডান’ – অর্থাৎ ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা। তার কথা ৩১শে জানুয়ারি ব্রিটেন অবশ্যই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ করবে ।
নতুন আলোচনার বিষয় ‘ট্যাকটিক্যাল’ ভোট?
তবে বরিস জনসন যেন কিছুতেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান – তাহলেই ব্রেক্সিট ঠেকানো যাবে বলে মনে করছে লিবডেমের মতো বিরোধী দলগুলো।
যাদের বলা হয় রিমেইনার অর্থাৎ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকার পক্ষে – তারা হয়তো তাদের সব ভোট যেন এক বাক্সে পড়ে অর্থাৎ ট্যাকটিক্যল ভোটের চেষ্টা করবেন – ব্রেক্সিটপন্থীদের হারানোর জন্য । রব ওয়াটসন বলছিলেন, এ চেষ্টা কেউ করলেও তা কঠিন হবে।
“আমি কিছু জনমত জরিপে দেখেছি যে অনেকে কৌশলগত বিবেচনায় ভোট দিতে পারেন। কিছু জরিপ বলছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জনই এভাবে ভোট দিতে পারে।”
“তবে ব্রিটেনের লোক আগে এভাবে ভোট দেয় নি – কারণ এখানে আসন সংখ্যা ৬শ’রও বেশি, তা ছাড়া নির্বাচনের পদ্ধতি হলো যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে সে-ই জিতবে। ফলে ব্যাপারটা কঠিন। তবে, যে যার পছন্দের পার্টিকেই সবসময় ভোট দেবে – এমন আনুগত্য আগে থাকলেও, এখন কমে গেছে। ফলে কয়েকদিন পরই জানা যাবে ভোটের সময় কি হয়।”
দিয়া চক্রবর্তীও বলেন, ট্যাকটিক্যাল ভোটিংএর জন্য কেউ কেউ ওয়েবপেজ তৈরি করে তৎপরতা চালাচ্ছে, তবে এটা ফলাফলে কতটুকু প্রভাব ফেলে তা এখনো বলা কঠিন।
ইহুদি, মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ
জেরেমি করবিনের ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। কিন্তু লেবার পার্টির মধ্যে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ তার জন্য সহায়ক হয় নি।
রব ওয়াটসনের কথায়, লেবার পার্টি ইহুদিদের ভোট টানতে সমস্যায় পড়বে। ঠিক একই ভাবে কনসারভেটিভ পার্টির ভেতরে ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগের কারণে তাদেরও মুসলিমদের ভোট পেতে অসুবিধা হবে।
‘যুক্তরাজ্যে’ ভাঙন?
ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে এ বিভক্তির আরো সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া হতে পারে ব্রিটেনের ওপর।
স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের অধিবাসীদের বড় অংশই চায় ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকুক। তাই ব্রেক্সিট হলে যুক্তরাজ্য ভেঙে যেতে পারে এ আশংকা আছে।
আরেক দিকে, ব্রেক্সিট হলে ইউরোপের ঐক্যও হুমকির মুখে পড়তে পারে – এমন সম্ভাবনার কথাও অনেকে বলেন।
রব ওয়াটসনের মতে – ব্রেক্সিটপন্থীরা হয়তো আশা করছে যে যুক্তরাজ্য অক্ষুণ্ণ রেখেও ব্রেক্সিট সম্ভব, কিন্তু তারা হয়তো খুব ভেবেচিন্তে কথাটা বলছে না। ব্রেক্সিট যে যুক্তরাজ্যের ঐক্যের ওপর প্রচন্ড চাপ ফেলবে – এতে কেউই দ্বিমত করবে না। বরিস জনসন হয়তো ব্রেক্সিট পেতে পারেন কিন্তু তার মূল্য হতে পারে যুক্তরাজ্যের ভেঙে যাওয়া।
এসব কারণেই এটাকে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সব ব্রিটেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন।
এর ওপর শুধু যে ব্রিটেনের সাথে ইউরোপের সম্পর্কই নির্ভর করছে তাই নয়, বিশ্বে তার অবস্থান, তার পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনৈতিক মডেল – সব কিছুই নির্ভর করছে।
এ নির্বাচন দেখিয়ে দিচ্ছে যে ব্রিটেনে রাজনীতিবিদরা কত অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছেন, যিনি সরকার গঠন করবেন তিনিও জানবেন যে তার সরকার একটি জনপ্রিয় সরকার নয়।
বাংলাদেশ সময় :৫৫০ ঘন্টা ,০৬ ডিসেম্বর ২০১৯.
বাংলাপোস্ট /জামিল
সূত্র : বি বি সি