ভারতের সঙ্গে চীনের সীমান্ত সমস্যার মধ্যস্থতা করতে চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীন এবং ভারত দুই দেশই তাদের মধ্যেকার সমস্যা সমাধানে সক্ষম”।

ভারত এবং চীনের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এসব সীমান্ত এলাকায় ভারত চীনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় টহলদারি দলের সঙ্গে চীন সেনারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে চীন ও ভারতের মধ্যে। এদিকে দিন কয়েক আগে চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির সেনাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলে। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য মতে, লাদাখের কাছে বিমানঘাঁটি স্থাপন করার ব্যাপক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে চীন।

ভারতের অভিযোগ, ভারত-চিন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে চীনের সেনাবাহিনী।

এর মধ্যে বুধবার হঠাৎ সকলকে অবাক করে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে ভারত এবং চীনের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন। ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় জানান, “আমরা ভারত ও চীন দুই দেশকেই জানিয়েছি যে আমেরিকা তাদের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান সীমান্ত বিরোধের মধ্যস্থতা বা সালিশি করতে প্রস্তুত, ইচ্ছুক এবং সক্ষম। আপনাদের ধন্যবাদ!”

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই প্রস্তাবের বিষয়ে প্রথমবার প্রতিক্রিয়া দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাঁও লিজিয়ান জানান, সামরিক পরিস্থিতির সমাধানে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না দুই দেশ।

ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে তিনি জানান, “চীন এবং ভারত আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে বিষয়গুলির যথাযথভাবে সমাধান করতে সক্ষম।আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে হওয়া সমস্যাগুলোর যথাযথভাবে সমাধান করতে সক্ষম। এবিষয়ে আমাদের তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও দরকার নেই।

এদিকে বৃহস্পতিবার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, চীনের সঙ্গে তাদের মতবিরোধের মধ্যস্থতায় আমেরিকার সাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, “কূটনৈতিক স্তরে দিল্লি ও বেইজিং আলোচনা চালাচ্ছে। পাশাপাশি সামরিক স্তরে উত্তেজনা কমাতে আলোচনা করছে দুই দেশের বাহিনী। সীমান্তে শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখতে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত ত চীন।”

তিনি আরও বলেন, “দুই দেশের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু সেই পার্থক্যের ছায়া যাতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে না পড়ে, পারস্পরিক বোঝাপড়া যাতে নষ্ট না হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে এই মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।

সূত্র:ইত্তেফাক