আজ শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। ভোর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ সভায় যোগ দিচ্ছে মিছিল। পদ্মা সেতুর কাঠালবাড়ী সংযোগ সড়কের পর থেকে পায়ে হেঁটে আসছে। কোনো যানবাহনকে আসতে দিচ্ছেন না প্রশাসন। 
 
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৫ টা। প্রায় হাজারখানেক মানুষের জটলা। সবার মুখে স্লোগান আর কড়হাতিতে পুরো এলাকাই উৎসব চলছে। কোনোভাবেই ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না তাদের। র‍্যাব, পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে তাদের ঠেকাতে। সকাল ৬টার পর খুলে দেওয়া হয় জনসভাস্থলের জমায়েতের স্থান। দীর্ঘ লাইনে স্ক্যানার দিয়ে চেক করে ঢুকতে দিচ্ছেন তাদের। অন্যদিকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে বড় বড় লঞ্চযোগে সাধারণ মানুষ আসছে সভায় যোগ দিতে। সকল ৭টার মধ্যেই অর্ধেক এলাকায় পূর্ণ হয়ে গেছে। 

এদিকে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে মাদারীপুরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বাংলাবাজার ঘাটে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাবসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুরো ৮ কিলোমিটার এলাকায় পুরোটাই সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। বসানো হয়েছে ২৬টি বড় পর্দার মনিটর। ৭ শতাধিক মাইকে সাউন্ড দেওয়া হচ্ছে। ২০টি অস্থায়ী পন্টুনে লঞ্চ থেকে নামার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সকাল সাড়ে ৬টায় বরিশাল থেকে আসা রমিজউদ্দিন বলেন, ‘রাত ১টায় লঞ্চে উঠছি। সারা রাত নাম গান গেলে সকালে ঘাটে নামছি। আমাদের এটা ঈদের আনন্দের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়, বরং আমাদের মুক্তির দিন আজ। অনেক কষ্ট আর ভোগান্তি থেকে বাঁচার দিন। যে কারণে আমাদের ফুর্তি কোনো অংশেই কম নয়। আমরা প্রায় বরিশাল থেকে এক লাখ মানুষ সভায় আসব।’ 

মাদারীপুর পৌর শহর থেকে আসা নান্নু মুন্সি বলেন, ‘ভোর রাতে রওনা দিয়েছি। সকালে আলো ফোটার আগেই চলে আসছি। প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে আসতে হয়েছে। কোনো যানবাহন আসতে দেওয়া হয় না। এখন মাঠে আসছি, এতেই খুশি আমরা। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যে উপহার দিয়েছে, এতেই আমাদের সামন্য কষ্ট কোনো কষ্টই না।’ 

এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘মূল মঞ্চের সামনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাবসহ অন্তত ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করেছি। এখন ভালোভাবে অনুষ্ঠানটা শেষ হলেই আমাদের শান্তি। পুলিশের অন্তত ১৫ হাজার কর্মী সভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাবের ২ হাজারসহ সব মিলিয়ে অন্ত ৪০ হাজার প্রশাসনের কর্মীরা মাঠে রয়েছে।’