হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার ঘোষণা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। ভাস্কর্য বিরোধিতার নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

আাজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতারা জানান, আগামীকাল রোববার আদালতে তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন। এ সময় তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে মৌলবাদী অপশক্তি মামুনুল হক ও ফয়জুল করিম কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশের সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এমন বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটাক্ষ ও অবমাননা করে মামুনুল গংরা প্রকাশ্যে বড় বড় গলায় কথা বলছে। মৌলবাদী অপশক্তিরা ধর্মের দোহাই দিয়ে ভাস্কর্য নিষিদ্ধ বলে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এরা ভাস্কর্য ও মূর্তির পার্থক্যের অপব্যাখ্যা দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ না নিলে আমরা দেশ ও জাতির ‘সমূহ বিপর্যয়ের’ আশঙ্কা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

ধর্ষণের মতো বলাৎকারের অপরাধে অভিযুক্ত ও বলৎকারের সমর্থনদাতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান মামুন। তিনি বলেন, ‘গত এক মাসে দেশে প্রায় ৩৫ জন মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীকে বলৎকার করা হয়েছে, যার মধ্যে দুইজন শিশু মৃত্যুবরণ করেছে এবং ইতিমধ্যে একজন শিশু আত্মহত্যা করেছে। খুবই দুঃখের বিষয় যে, বলৎকার নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের আলেমদের কোনো মন্তব্য বা প্রতিবাদ আমাদের চোখে পড়েনি ।’

মামুন আরও বলেন, ‘নিজেদেরকে ইসলামিক দল হিসেবে দাবি করা হেফাজতে ইসলামের নেতারাও বলাৎকারের ঘটনাগুলো নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় এই বলৎকারের সাথে তারাও জড়িত বা সমর্থনদাতা। মামুনুল হক গংরা বলাৎকারের নীরব সমর্থনদাতা।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বলৎকারের ঘটনা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র আগামী ৯ ডিসেম্বর বুধবার বিকাল ৪টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রদর্শন করা হবে। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বলৎকারের প্রতিবাদে আগামী ১১ ডিসেম্বর শুক্রবার বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হবে।’

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান রাজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি মিলন ঢালী, সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম বাপ্পী।