রাজধানীতে অস্ত্রধারীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। নিহতদের একজন হলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিটু (৫৪)। তিনি নিজ গাড়িতে বসা ছিলেন। অপরজন রিকশা আরোহী প্রিতি (২৪)। তিনি ঢাকার একটি কলেজের ছাত্রী বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তির নাম মুন্না (২৬)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় শাহজাহানপুর ইসলামিয়া হাসপাতালের সামনে অস্ত্রধারীরা এই হামলা চালায়। স্থানীয়রা জানিয়েছে, অস্ত্রধারীরা মোটরসাইকেলে করে এসে একটি চলন্ত গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতারি গুলি চালায়। এসময় গাড়ির ভেতর বসা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। পাশ দিয়ে যাওয়া রিকশায় বসা প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তার উপর পড়ে যান। এসময় আরও এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তার উপর পড়ে যায়। এলোপাতারি গুলিতে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। 

রাত ১১টায় স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ তিনজনকেই উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে টিটু এবং প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

পুলিশের সন্দেহ, অস্ত্রধারীদের টার্গেট ছিলো আওয়ামী লীগ নেতা টিটু। এলোপাতারি গুলিবর্ষণের রিকশা আরোহী প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। 

মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এছাড়া আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাড়ির  ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, জাহিদুল ইসলাম টিটু যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।

আহত গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, তার মালিক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নিয়ে এজিবি কলোনি থেকে গাড়িযোগে শাজাহানপুরের বর্তমান বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে শাজাহানপুর আমতলা মসজিদ এলাকায় যানজটে আটকে ছিলেন। এসময় হঠাৎ মুখোশ পরা এক ব্যক্তি তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করলে তারা গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে টিপু মারা যান। 

নিহত সামিয়া প্রীতির বান্ধবী সুমাইয়া জানান, তারা দুই বান্ধবী রিকশায় তিলপাড়া যাচ্ছিল। খিলগাঁও রেল গেইটের কাছাকাছি যাওয়ার সময় পিছনে ১০/১২ টি গুলির শব্দ শুনতে পাই। একইসঙ্গে আগুনের মতো কিছু মনে হচ্ছিল। আমরা রিকশা থেকে নেমে দৌড় দেয়ার চেষ্টা করি। তবে আমার বান্ধবী পড়ে যায়। একটু পর তাকে ডাকাডাকি করলেও সে আর কথা বলছিল না। হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ঘটনার পর মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংঠনের উত্তেজিত নেতা কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢামেক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন ঢামেক হাসপাতালে উপস্থিত ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, খুনি যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।