অনলাইন ডেস্ক :
এক বয়স্ক দম্পতি করোনাভাইরাস লকডাউনের মধ্যেও সীমান্তের দুই দিকের দুই দেশ থেকে প্রতিদিন যেভাবে দেখা-সাক্ষাৎ করছেন সেটি তাদের রীতিমত স্থানীয় তারকায় পরিণত করেছে।
পঁচাশী বছর বয়সী ইনগা রাসমুসেন থাকেন ডেনমার্কে। আর ৮৯ বছর বয়সী কার্স্টেন টুচসেন হ্যানসেন থাকেন জার্মানিতে। এই লকডাউনের মধ্যেও তারা প্রতিদিন সীমান্ত শহর আভেনটফটে এসে দেখা করেন। গল্প করেন, পানাহার করেন। তবে অবশ্যই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর জার্মানি এবং ডেনমার্ক তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল প্রায় দুই সপ্তাহ আগে।
জার্মানিতে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে এমন করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা ৬৩ হাজার। অন্যদিকে ডেনমার্কে এই সংখ্যা ২ হাজার ৫শ।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যে ভিসাবিহীন চলাচলের ব্যবস্থা চালু আছে, তার ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্য সীমান্ত প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সীমান্ত আবার ফিরে আসছে। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রায় ২৫ বছর পর।
কিন্তু এই প্রবীণ দম্পতির ভালোবাসাকে আটকাতে পারেনি এই বিশ্বমহামারী।
জার্মানির সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাকারে মিজ রাসমুসেন বলেন, “এটা খুবই খারাপ, কিন্তু আমরা তো এটা বদলাতে পারবো না।”
সীমান্তের দুই দিকে নিরাপদ দূরত্বে বসে থাকা এই দম্পতিকে দেখতে পেয়েছিলেন নিকটবর্তী শহর টন্ডের এর মেয়র। তিনি তখন বাইক চালিয়ে সেই পথে যাচ্ছিলেন।
এ প্রবীণ দম্পতির প্রথম দেখা হয়েছিল দুবছর আগে। গত এক বছর ধরে তারা প্রায় প্রতিদিন দেখা করে একসঙ্গে সময় কাটিয়েছেন।
মিজ রাসমুসেন থাকেন ডেনমার্কের দিকের শহর গেলেহাসে। অন্যদিক মি. হ্যানসেন থাকেন জার্মান শহর সাডারলাগামে।
যখন মি. হ্যানসেন দেখা করতে আসেন তখন কখনো সাথে নিয়ে আসেন এক বোতল লেমনেড, তবে মিজ রাসমুসেন কফিতেই আসক্ত বেশি। কারণ তাকে গাড়ি চালিয়ে সেখানে আসতে হয়, একটি ড্যানিশ সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।
মিজ রাসমুসেন এবং মি. হ্যানসেন এক সঙ্গে বেড়াতেও গেছেন আগে। পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হবে, তখন তারা আবার এক সঙ্গে বেড়াতে যাবেন বলে পরিকল্পনা করছেন।
করোনাভাইরাসের বিশ্বমহামারী বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে বিরাট উলট-পালট ঘটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এই দুজন তার মধ্যেই নিজেদের সম্পর্ক আর ভালোবাসা সজীব রাখার অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছেন।
সূত্র: বি বি সি বাংলা