ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ২০১ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৯৬ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জন।
আজ সোমবার (৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ৩৩ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ছয়জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৯৬ জনের।
এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৬৫৭ জন এবং নারী ৪৩৯ জন। পুরুষ ৭৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং নারী ২০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
জানানো হয়, নতুন যে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জন, রাজশাহী বিভাগের তিনজন, খুলনা বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের চারজন, সিলেট বিভাগের তিনজন, রংপুর বিভাগের দুইজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের দুইজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৫ জন এবং বাসায় ৯ জন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৫২৪ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭৬ হাজার ১৪৯ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৫ হাজার ২০১টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ২৪৫টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ২০১ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আট লাখ ৬০ হাজার ৩০৭টি।
সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছয় হাজার ৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪৯টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৭৫টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৪০১টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৮৫টি।
এ পর্যন্ত সারা দেশে সাধারণ শয্যায় ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৪৪৯ জন, আইসিইউ-তে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২২০ জন, সারা দেশে সাধারণ শয্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭১৫ জন এবং একইসময় ছাড় পেয়েছেন ৬৪৪ জন।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৬৭৭ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৯৮ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩১ হাজার ৫৪৯ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৫৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৭৯৪ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ১৭৮ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮৩৯ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৭৯ হাজার ১৭০ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ১৫ হাজার ৩৬৯ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩ হাজার ৮০১ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৬০ হাজার ১৭৮টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৪৯ লাখ সাত হাজার ৪৫৪ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্লাটফর্ম মুক্তপাঠ-এ অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪১৪ জন। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।