জ্বালানী সাশ্রয়ে বাংলাদেশের অফিসের সময়সূচীতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার।
আগামী বুধবার থেকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস চলবে সকাল আটটা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত।
ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল নয়টা থেকে চারটা পর্যন্ত।
এছাড়া স্কুল ও কলেজ সপ্তাহে দুইদিন বন্ধ থাকবে বলে সরকার জানিয়েছে।
তবে সেটা কবে থেকে কার্যকর হবে, তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে জানাবে।
- জ্বালানি তেলের দামের নজিরবিহীন বৃদ্ধির আসল কারণ কী
- পেট্রোল-অকটেনের চাহিদা আর যোগান: পরিস্থিতি আসলে কী?
- আমদানির ওপর কতটা নির্ভরশীল বাংলাদেশের বিদ্যুৎ?
আগামী বুধবার থেকেই নতুন এই সময়সূচী কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, সারাদেশে আমন উৎপাদনে যাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেচ দেয়া যায়, সেজন্য পল্লী বিদ্যুত সমিতির মাধ্যমে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। সোমবার মধ্যরাত থেকেই এটি কার্যকর করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলছেন, নতুন সময়সূচীর কারণে একদিকে যেমন বিদ্যুতের সরবরাহ ভালো হবে, তেমনি ট্রাফিক ব্যবস্থার ওপরেও চাপ কমবে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে বলে তিনি জানান।
তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সময়সূচীর ব্যাপারে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে এই মাসেই ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল বা কেরোসিনের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশের সরকার।
তবে গত জুলাই মাস থেকেই জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত করেছে বাংলাদেশের সরকার। ফলে বহু বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় রেশনিং আকারে লোডশেডিং চারু করতে হয়েছে।
তবে দেশের অনেক এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমনের ভরা মৌসুমে সেচ দেয়া যাচ্ছে না বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন।
এর আগে সরকারি ভবনে এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহার সীমিত করা, কর্মকর্তাদের স্যুট-টাই না পরা এবং বিপণি বিতানগুলো রাত আটটার মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার মতো নির্দেশনাও দেয়া হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট, ১১টার মধ্যে রেস্তোরা এবং ১২টার মধ্যে ওষুধের দোকান বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছে।
সরকার আশা করছে, শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এই সংকটের জন্য বিশ্ববাজারে তেল এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির চড়া দামকে দায়ী করছে সরকার।