বাংলাপোস্ট২৪ ডেস্কঃ
ঐক্যের পরিবর্তে জোটটির শরিকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অনৈক্য। যা দিন দিন প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে। জোটের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না শীর্ষ নেতারা। এমনকি ঘোষিত কর্মসূচিতেও তাদের দেখা যাচ্ছে না। সর্বশেষ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস কাবে জোটের এক অনুষ্ঠানে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম সহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন অনুপস্থিত।
জোটটির একাধিক নেতার অভিমত, বিএনপির ‘একলা চলো নীতি’, ঐক্যফ্রন্টকে প্রাধান্য দেয়া এবং সর্বশেষ কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তি মঞ্চ গঠনকে কেন্দ্র করে এ টানাপোড়েন শুরু হয়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে জোট আরেক দফা ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের।
সূত্র জানায়, গত জাতীয় নির্বাচনের পর জোটের কার্যক্রম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। জোটের প্রধান শরিক বিএনপি দল গোছানোর কাজে মনোযোগ দেয়। শরিকদের বাদ দিয়ে ‘একলা চলো নীতি’ অনুসরণ করে দলটি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলগতভাবে কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন তারা। গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইস্যু না থাকায় জোটের কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। কিন্তু বুয়েট ছাত্র আবরার ইস্যুতে দলের পাশাপাশি জোট ও ফ্রন্টকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয় বিএনপির হাইকমান্ড। এ ইস্যুতে রাজপথে সক্রিয় থাকতে নেয়া হয় নানা পরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে দীর্ঘ চার মাস পর জোটের বৈঠক ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সভা হয়।
কিন্তু সেই বৈঠকে জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ সহ অনেকেই উপস্থিত হননি।
অতীতে দলের শীর্ষ নেতা না থাকলে মহাসচিব বা সাধারণ সম্পাদক বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করতেন। কিন্তু গত বৈঠকে তাদের দেখা যায়নি। দলের চতুর্থ সারির নেতাদের বৈঠকে পাঠানো হয়। এ নিয়ে বৈঠকে শরিকদের কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত বলে তারা মত দেন। যেদিন জোটের বৈঠক চলছিল সেদিন বিকালেই জাতীয় প্রেস কাবে সংবাদ সম্মেলন করেন অলি আহমেদ। সেখানে সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম সহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জোটের বৈঠকের দিন অলির সংবাদ সম্মেলন নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। জোটকে চ্যালেঞ্জ করেই তিনি এসব করছেন বলে তারা মনে করছেন। এমন পরিস্থিতিতেও বিএনপি নেতাদের প্রত্যাশা ছিল বৈঠকে না এলেও জোটের কর্মসূচিতে তারা উপস্থিত থাকবেন।
কিন্তু মঙ্গলবার ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে তারা উপস্থিত হননি। জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ভারতের সঙ্গে করা চুক্তির প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নেবে শরিকরা। কিন্তু নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দেখা যায়নি। এ নিয়ে অনেকে আরও হতাশ হন। জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও সভায় শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে অনেকেই ােভ প্রকাশ করেন।
বাংলাপোস্ট২৪/সাফিউল
বাংলাদেশ সময় ১৪২৭ অক্টোবর ১৬ ,২০১৯