হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে স্বামীকে বেঁধে নববধূকে গণধর্ষণের মামলায় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সোলায়মান হোসেন রনিসহ (২২) দুইজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সোমবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আসমা বেগম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেওয়া অন্যজন হলেন শুভ মিয়া।
এদিকে এ মামলায় আরও ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের ইকবাল হোসেন ছোট্ট মিয়ার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সোলায়মান হোসেন রনি (২২), একই গ্রামের রুকু মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (১৯) ও ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে মিঠু মিয়া (২৩), উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের পাতা মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া (২৩) ও মিজান মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২৫)।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি। তিনি জানান, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতেও তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, রোববার দিবাগত রাতে লাখাই থানা পুলিশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার ইসলামপুর বউবাজারের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে হৃদয় মিয়া, সুজাত মিয়া ও জুয়েল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।
লাখাই থানার ওসি মো. সাইদুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা পাহাড়ের পাদদেশে বাঁশ ও কাঠের তৈরি একটি ঘরে আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানকার সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আসামি রনি ও শুভর ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। সোমবার বিচারক শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের এক যুবক তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে টিক্কাপুর হাওরে ঘুরতে যান। হাওরের মাঝখানে যাওয়া মাত্রই একই গ্রামের মুছা মিয়ার নেতৃত্বে ৮ যুবক তাদের নৌকায় উঠে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে নির্জন স্থানে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে।
বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়। ঘটনার পর স্বামী-স্ত্রী ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন। গত বুধবার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বামী। ঘটনার পর সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে নববধূর স্বামীর নিকট ৯ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আসামিরা।
অবশেষে তিনি নিরুপায় হয়ে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি মামলা করেন। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
সূত্রঃ আমাদের সময়