করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে এক প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ ঘর থেকে বের করা হয়েছে। শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরের বাসা থেকে ওই যুবকের লাশ দাফনের জন্য বের করা হয়। এর আগে তাঁর লাশ কেউ ছুঁয়ে দেখার সাহস পাননি।
করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রতিবন্ধী যুবক শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে মারা যান বলে পরিবারের লোকজনের ধারণা। আজ শনিবার ভোরে বাড়ির লোকজন তাঁর নিথর শরীর বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে। এই যুবকের বাবা গত বুধবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে করোনার উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে মারা যান। পরে নমুনা পরীক্ষায় তাঁর বাবার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। এ কারণে বাসার সব সদস্য আইসোলেশনে চলে যান। চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মৃত্যু হওয়ার ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা একটি লাশ ঘরে বিছানাতেই ছিল। করোনা-উপসর্গ নিয়ে নাকি যুবকটি মারা যান। কেউ লাশ সরানো ও দাফনের ব্যবস্থা করার সাহস পাননি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেরিতে খবর পেয়ে লাশ সরিয়ে দাফনের জন্য গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।’
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ঘটনাটি জানার পর চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে বার্তা দেন। তাঁর ফোন কল পেয়ে পুলিশ কমিশনার লাশ সরানোর ব্যবস্থা করেন।
জাহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবন্ধী যুবক মারা যাওয়ার পর কেউ তাঁর লাশের কাছে ঘেঁষতে সাহস পাচ্ছিলেন না। এই দাবদাহের মধ্যে ১৬ ঘণ্টা লাশ বিছানাতেই ছিল। আমি পুলিশ কমিশনারকে বার্তা পাঠাই।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত যুবক পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন। মেজ ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। বাবা ও ভাইকে হারিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী এখন দিশেহারা। তাঁদের পাশে আমাদের সবার দাঁড়ানো উচিত।’
বাবা ও ভাইয়ের মৃত্যুর পর পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী। মা ও বোনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে রেখে আসতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন বাধা দিচ্ছেন। সেখানে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি আসে।
বড় ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার অসুস্থ বড় ভাইটাও সম্ভবত মারা গেছে। বাসায় একটা ডাক্তার বা কেউ এসে কনফার্ম করতে পারবেন? কোনো হেল্প?’